আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠকবৃন্দ! আশা করি আল্লহর রহমতে বেশ ভালো আছেন। পরীক্ষা ও কর্মব্যস্ততার কারণে অনেকদিন ধরে পদাবলীতে কোন আর্টিকেল লিখতে পারিনি।
তো আমি লক্ষ্য করলাম আমাদের পদাবলীর পাঠকদের অনেকেই ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম জানতে চাচ্ছেন। এবং অনেকেই অভিযোগ করেছেন পাসপোর্ট নিয়ে কোন তথ্য বহুল আর্টিকেল কোন ব্লগারই লেখেননি।
তো আজকে আপনাদের জন্য আমি ই-পাসপোর্ট নিয়ে একটি তথ্যবহুল আর্টিকেল লেখার চেষ্টা করেছি। আপনি যদি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহ পড়েন, তাহলে আমি আশা করি কোন দালাল ধরা ছাড়াই আপনি একটি ই-পাসপোর্ট খুব দ্রুতই তৈরি করতে পারবেন।
এক নজরে সকল পোস্ট
ই-পাসপোর্টি কি?
বর্তমানে এমআরপি বা যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টের মতো ই-পাসপোর্টের বইও একই রকমের থাকবে।
তবে যন্ত্রে পাসপোর্টের বইয়ে প্রথমে যে তথ্য সংবলিত দুইটি পাতা থাকে, ই-পাসপোর্টে তা থাকবে না। সেখানে বরং পালিমানের তৈরি একটি কার্ড ও অ্যান্টেনা থাকবে। সেই কার্ডের ভেতরে চিপ থাকবে, যেখানে পাসপোর্ট বাহকের সব তথ্য সংরক্ষিত থাকবে।
ডাটাবেজে থাকবে পাসপোর্টধারীর তিন ধরণের ছবি, ১০ আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ।
ফলে যেকোনো দেশের কর্তৃপক্ষ সহজেই ভ্রমণকারীর সম্পর্কে সব তথ্য জানতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে পড়ুন বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন।
ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে?
অনেকেই মনে করেন ই-পাসপোর্ট করা মহা কিছু। এই লাগে, সেই লাগে ইত্যাদি ইত্যাদি। আসলে আমরা বাঙালী! নিজে চেষ্টা না করে দরবেশ কে টাকা খায়াতে একটু বেশিই ভালোবাসি।
প্রিয় ভাইয়েরা আমার! আমি যে তথ্য দিব এইটাই শতভাগ সত্য। কোন দালালের খপ্পরে পড়বেন না দয়া করে!
ই-পাসপোর্ট করার জরুরী কাগজপত্র
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
- ১। আবেদনপত্রের সারংশের প্রিন্ট কপি (অ্যাপয়েন্টমেন্ট সহ)
- ২। সনাক্তকরণ নথির প্রিন্ট কপি (জাতীয় পরিচয় পত্র/ জন্ম নিবন্ধন নং)
- ৩। পেমেন্ট স্লিপ
- ৪। পূর্ববর্তী পাসপোর্ট এবং ডাটা পেজের প্রিন্ট কপি (যদি থাকে)
- ৫। তথ্য সংশোধনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র(যদি থাকে)
- ৬। আবেদনপত্রের প্রিন্ট কপি(ঐচ্ছিক )
ইপাসাপোর্ট করার নিয়ম
সু-প্রিয় ভাই আমার! আজাইরা বসে বসে দরবেশ বাবাকে টাকা না খাবাইয়া নিজেই একটু চেষ্টা করে দেখুন। ৪/৫ হাজার টাকা সেভ হবে। দেশে একটা দাললও কমে যাবে। যাক কথা না বাড়িয়ে এবার তাহলে কাজের কথা বলি।
১/ আপনি যদি ই-পাসপোর্ট তৈরি করতে চান তাহলে ই-পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করার আগের দিন বা আবেদন করার দিন সকাল বেলায় আপনার উপজেলা নির্বাচন অধিদপ্তর থেকে ১২০/২২০ টাকা দিয়ে আপনার এনআইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র) ভেরিফাই করে নিন।
২/ জাতীয় পরিচয়পত্র ভেরিফাই করা হলে হলে এবার আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য অনুযায়ী ই-পাসপোর্ট ফরম পূরণ করুন। (ই-পাসপোর্ট ফরম পূরণ করার নিয়ম ও pdf নিচে দেওয়া হলো)
৩/ তারপর ই-পাসপোর্ট এর নির্দিষ্ট ফি প্রদান করুন। (ই-পাসপোর্ট ফি সংক্রান্ত তথ্য নিচে দেওয়া হলো)
৪/ এবার আপনার পূরণকৃত আবেদন পত্রটি প্রিন্ট করে নিন, (অ্যাপয়েন্টমেন্ট সহ) আবেদন পত্রটির দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় আবেদন ফির রশিদটি ঘাম দিয়ে আটকিয়ে দিন। আর আবেদন পত্রের শেষ পৃষ্ঠায় জাতীয় পরিচয়পত্র ভেরিফাই কপি ও অর্জিনাল কপির ফটোকপি লাগিয়ে দিন। পূর্বের পাসপোর্ট থাকলে পাসপোর্টের ফটোকপি লাগিয়ে দিন।
৫/ তথ্য গুলো সঠিক হয়েছে কি না তা আরেকবার যাচাই করে দেখুন। এবং আপনার জেলার পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে জমা দিয়ে আসুন।
ই-পাসপোর্ট ফরম পূরণের নির্দেশাবলী:
ই-পাসপোর্ট ফরম পূরণের নির্দেশাবলী জানতে অবশ্যই অবশ্যই ই-পাসপোর্ট এর অফিসিয়ালি এই নির্দেশনাবলী পড়ুন..
অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম ও ফরম
ই-পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য অনলাইনে pdf রয়েছে তাছাড়াও সরাসরি অনলাইনে ফরম পূরণ করে প্রিন্ট করা যাবে। এবং এটাই উত্তম। অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করতে এইখানে ক্লিক করুন এবং পরবর্তী ধাপ অনুসরণ করুন।
ই-পাসপোর্ট ফি
ই-পাসপোর্ট ফি সংক্রান্ত বিস্তারিত জানতে এই আর্টিকেলটি পড়ুন..
প্রতারণা এড়াতে যা করবেন
- জাতীয় পরিচয়পত্র অর্জিনাল কপি (অনলাইন কপি হলেও চলবে) সঙ্গে নিয়ে যাবেন।
- উপজেলা থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র ভেরিফাই কপি নিবেন।
- জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে জন্মনিবন্ধন অনলাইন কপির ফটোকপি নিয়ে যাবেন।
- ১৮ বছরের নিচে হলে বা জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে মা/বাবার জাতীয় পরিচয়পত্রও সঙ্গে রাখবেন।
- পূর্বের পাসপোর্ট সঙ্গে নিয়ে যাবেন। (যদি থাকে)।
- তারপরও টালবাহানা করলে কারণ সহ তার থেকে লিখিত নিবেন।
পাসপোর্ট তাড়াতাড়ি হাতে পেতে যা করবেন
- নিজ নিজ উদ্যোগে পুলিশ ভেরিফাই আগেই সেরে নিবেন।
- কোন দালাল ধরা থেকে বিরত থাকবেন।